Recents in Beach

মুসলিমদের কেন দর্শন চর্চা প্রয়োজন?

মুসলিমদের কেন দর্শন চর্চা করা প্রয়োজন? । ড. সাইয়েদ হোসাইন নাসর । অনুবাদ:জোবায়ের আল মাহমুদ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য এবং তাঁর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করছি। রাসূল (সা)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করছি। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আমি প্রায় ৫০ বছর যাবৎ বিভিন্ন ইসলামী সভা-সম্মেলনে বক্তব্য দিয়ে আসছি। কিন্তু এইবারেই প্রথম আমাকে দর্শন নিয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য আহবান করা হয়েছে। আমি খুবই আনন্দিত এ কারণে যে, ইসলামী দর্শন ও বিশ্বের অন্যান্য দর্শন পড়াশুনার জন্য আমি আমার সারাজীবন ব্যয় করেছি। তাই আজকের এই অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে মুসলিমদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও দার্শনিক জীবন সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করা যাবে। গত কয়েক দশক ধরে ইসলামী বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনগুলো দর্শনচর্চাকে অবহেলা করে আসছিলো। তাই আমি আজকে বলবো, আমাদের মুসলিমদের জন্য এবং বিশ্বমানবতার জন্য দর্শন চর্চা কেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আমি দর্শনের মতো একটি বড় বিষয়কে অল্প সময়ে সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। প্রথমে দর্শন শব্দের সংজ্ঞা নিয়ে একটু বলি। আধুনিক মুসলিম চিন্তাবিদ ও সমাজ বিনির্মাণকারী অনেকের মধ্যেই দর্শন শব্দটি নিয়ে একটা ভয় কাজ করে। যেমন, মোহাম্মদ আবদুহু ও জামাল উদ্দিন আফগানিসহ আরো অনেকে আছেন, যদিও জামাল উদ্দিন আফগানী ইসলামী দর্শন নিয়ে অনেক বছর ইরানে পড়াশুনা করেছেন, এবং এরপর আফগানিস্তান, মিসর ও তুরস্কেও পড়াশুনা করেছেন। যাই হোক, দর্শন একটি ব্যাপক বিষয় হবার কারণে এটি সম্পর্কে আমাদের ধারণা অনেক অস্পষ্ট। যদিও এই অস্পষ্টতা মুসলিম বিশ্বে এবং পশ্চিমা বিশ্বে এক নয়, বরং দুই ধরনের অস্পষ্টতার মাঝে অনেক বড় পার্থক্য রয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বে দর্শনের ভিন্ন ভিন্ন ও বৈচিত্র্যময় অর্থ রয়েছে। সেখানকার মানুষেরা প্লেটোকেও দার্শনিক মনে করে, আবার দেরিদাকেও দার্শনিক মনে করে। অথচ এই দুই ব্যক্তির মাঝে অনেক বড় পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ, পশ্চিমা বিশ্বে দর্শনের অনেকগুলো বৈশ্বিক ধারণা রয়েছে, তারা কেবল একটিমাত্র ধারণার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বর্তমান সময়ের অধিকাংশ পশ্চিমা দর্শনের সাথে বিগত হাজার বছরের গ্রিক ও রোমান দর্শনের মিল নেই। পশ্চিমা গ্রিক ও রোমান দর্শনের সাথে ইসলামী দর্শনের বেশ মিল ছিলো। কিন্তু পশ্চিমা দর্শন আধুনিক যুগে এসে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে। ফলে অনেক জ্ঞানী মানুষ পশ্চিমা দর্শনকে এখন আর দর্শন মনে করেন না। কারণ, দর্শন মানে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রতি ভালোবাসা। কিন্তু অনেক পশ্চিমা দার্শনিক জ্ঞানকে ভালোবাসার পরিবর্তে ঘৃণা করেন। অন্য দিকে, মুসলিমদের নিকট দর্শনের অস্পষ্টতার কারণ হলো, অনেক মুসলিম ভুলেই গেছেন যে, কোরআনে অসংখ্যবার ‘হিকমাহ’ বা দর্শন শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে, “আল্লাহ যার ভালো চান, তাকে তিনি হিকমাহ বা দার্শনিক জ্ঞান দান করেন।” (সূরা বাকারা : ২৬৯) আরবিতে হিকমাহ ও ফালসাফা শব্দ দু’টি দর্শন অর্থে ব্যবহৃত হয়, যদিও ফালসাফা শব্দটি গ্রিক ফিলোসোফিয়া শব্দ থেকে এসেছে। ফালসাফা বা দর্শন ইসলামের একটি বিশেষ জ্ঞান হলেও ইসলামে এ জাতীয় আরো অনেক জ্ঞান রয়েছে। যেমন, কালাম, উসুল, এবং ধর্মতাত্ত্বিক অন্যান্য বিষয়গুলো। এগুলোকে সরাসরি দর্শন বলা না হলেও, অনেক ক্ষেত্রে এগুলো দর্শনের-ই অনুরূপ হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, সুন্নি মতাবলম্বী ও আশয়ারি চিন্তার প্রতিষ্ঠাতা ইমাম আশয়ারির কথা উল্লেখ করা যায়। তিনি গ্রিক ফালসাফার সমালোচনা করেছেন, কিন্তু তিনি নিজেই যুক্তি ও বুদ্ধির পক্ষে কথা বলতেন, যা দর্শনের-ই একটি বিষয়। এ ছাড়া, ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস ও যুক্তি নিয়ে প্রচুর আলোচনা করা হয়, যা আসলে দর্শনেরই আলোচ্য বিষয়। ক্লাসিক্যাল যুগের প্রত্যেক ইসলামী চিন্তাবিদই যুক্তি ও বুদ্ধি নিয়ে কথা বলেন, যদিও তাদেরকে দার্শনিক বলা হয় না। দর্শনকে আমরা রাজনীতির সাথে তুলনা করতে পারি। রাজনীতিতে যেমন ভালো-মন্দ রয়েছে, তেমনি দর্শনেও ভালো-মন্দ রয়েছে। রাজনীতি ছাড়া আমরা যেমন কোনো সমাজ চিন্তা করতে পারি না, তেমনি দর্শন ছাড়াও আমরা কোনো সমাজ চিন্তা করতে পারি না। কেউ সচেতনভাবে জানুক অথবা না জানুক, সব সমাজেই দর্শনের ধারণা বা নৈতিকতাগুলো থাকে। যেমন, ভালো কি এবং মন্দ কি? সত্য কি এবং মিথ্যা কি? সুন্দর কি এবং অসুন্দর কি? দর্শনের এই ধরণাগুলো ছাড়া কোনো সমাজ চলতে পারে না। ১৭৯৮ থেকে ১৮০০ সালের মধ্যে নেপোলিয়ন যখন মিসর দখল করে নেয়, তখন মুসলিম চিন্তাবিদদের জন্য একটি মারাত্মক বিপদ নেমে আসে। এই ঘটনার পর, গত ২০০ বছর পশ্চিমা বুদ্ধিজীবীরা ক্রমাগতভাবে ইসলামের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক আক্রমণ চালিয়ে যায়। তখন পশ্চিমা বুদ্ধিজীবীদেরকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে মুসলিম বুদ্ধিজীবীরা দর্শনের অনেক ধারণাকে বর্জন করে ফেলেন। অথচ তখন পশ্চিমা দর্শনের মোকাবেলায় ইসলামী দর্শনকে পুনরুজ্জীবিত করা প্রয়োজন ছিলো। ইসলামী বিশ্বে অনেকগুলো ইসলামী আন্দোলন রয়েছে, যারা দর্শন চর্চার বিরোধী। অথচ আমাদের বুঝা উচিত যে, মোঙ্গলরা যেভাবে ইসলামকে আক্রমণ করেছে, পশ্চিমা বিশ্ব সেভাবে ইসলামকে আক্রমণ করেনি। পশ্চিমা বিশ্ব ইসলামকে আক্রমণ করেছে দার্শনিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে। যখন মোঙ্গলরা ইসলামকে আক্রমণ করেছিলো, তখন তারা লক্ষ লক্ষ ঘোড়া এনে মুসলিমদের সম্পূর্ণ এলাকা ধ্বংস করে দিয়েছিলো এবং অসংখ্য মুসলিমকে হত্যা করেছিলো। কিন্তু তারা মুসলিমদেরকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আক্রমণ করতে পারেনি। তখন চেঙ্গিস খানের নাতী হালাকু খান যেভাবে তীর, ধনুক ও ঘোড়া দিয়ে ইসলামকে আক্রমণ করেছিলো, সেটা মুসলিমদের জন্য বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি। এখন যেভাবে পশ্চিমা বিশ্ব প্রতি রাতে মুসলিম শিশুদের ওপর ড্রোন হামলা করছে, সেটাও বড় ধরনের কোনো ক্ষতি নয়। বরং মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে পশ্চিমা বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক আক্রমণ। এখানে খুবই দুঃখজনকভাবে বলে রাখি, যখন অ্যামেরিকা বা পশ্চিমা বিশ্বের নীল চোখ ওয়ালা কোনো শিশুর মৃত্যু হয়, তখন বিশ্বের সবাই কান্নাকাটি শুরু করে। কিন্তু যখন আফগানিস্তান, পাকিস্তান বা সিরিয়ার কালো চোখওয়ালা কোনো শিশুকে ড্রোন দিয়ে হত্যা করা হয়, তখন কেউ একটু শব্দও করে না। যাই হোক, ড্রোন দিয়ে মুসলিমদেরকে হত্যা করা, অথবা, আইএমএফ এর মাধ্যমে মুসলিমদেরকে অর্থনৈতিকভাবে চাপে রাখা, অথবা পশ্চিমা বিশ্ব নিজেদের পছন্দ মতো মুসলিম বিশ্বের সরকার নির্ধারণ করা, এ সবগুলোর চেয়েও বড় ক্ষতি হলো মুসলিমদেরকে বুদ্ধিবৃত্তিক আক্রমণ করা। মুসলিমদেরকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আক্রমণ করার ফলে মুসলিমরা তাদের নিজেদের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। মুসলিমরা এখন কোনো কিছুই সঠিকভাবে চিন্তা করতে পারে না। মুসলিমদের চিন্তার সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। যে সভ্যতা পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক বড় বড় দার্শনিক ব্যক্তিদেরকে জন্ম দিয়েছিলো, সে সভ্যতা আজ চিন্তাশূন্য। তাই, এটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক ব্যাপার যে, অনেকগুলো ইসলামী আন্দোলন আজ দার্শনিক চিন্তার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে। যদিও মুসলিমদের ঈমানি শক্তি এখনো আছে, আলহামদুলিল্লাহ, কিন্তু মুসলিমরা চিন্তা-ভাবনা করা ও দর্শন চর্চা করা থেকে অনেক অনেক দূরে সরে গিয়েছে। এমনকি, অনেকে চিন্তা-ভাবনা ও দর্শন চর্চা করার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করেন না। অথচ, দর্শন চর্চার ঐতিহ্যটি মুসলিমদের এগারো শত বছরের ঐতিহ্য। আব্বাসী খেলাফতের সময়ে দর্শনের ওপর প্রচুর কাজ হয়েছিলো। মুসলিমরা আজ কোরআনের ঐ আয়াতটি ভুলে গেছে, যেখানে বলা হয়েছে, “আমি আরবি ভাষায় এই কোরআন অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করতে পারে।” (সূরা ইউসুফ : ২) আরবি ভাষায় আকল শব্দটি ক্রিয়াপদ এবং বিশেষ্যপদ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। আকল মানে কেবল যুক্তি (Reason) নয়, আকল মানে হলো বুদ্ধি (Intellect)। আকল হলো এমন একটি শব্দ যা যুক্তি ও অহির মাঝে সম্পর্ক সৃষ্টি করে, যা ধর্ম ও বিজ্ঞানের মাঝে সমন্বয় সাধন করে এবং যা দুনিয়া ও আখিরাতের মাঝে সেতুবন্ধ রচনা করে। সুতরাং, আকল শব্দটি দিয়ে কেবল যৌক্তিক বিশ্লেষণকে বুঝায় না, বরং আদিকাল থেকে চলে আসা সামগ্রিক বুদ্ধিকে আকল বলে। আমরা মুসলিমরা এখন এমন একটি জাতিতে পরিণত হয়েছি, যারা কোনো চিন্তা-ভাবনা করা ছাড়াই কোরআন পড়ে। আপনি চিন্তা করতে পারেন, এটি কতটা হাস্যকর? যে সভ্যতা সম্পূর্ণ জ্যামিতিক আকৃতিতে তাজমহল গড়লো, ইরানের এসফাহন মসজিদ তৈরি করলো, বিভিন্ন মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করলো, যেগুলো ছিলো গণিতের সর্বোচ্চ জ্যামিতিক আকৃতিতে গড়া; সে সভ্যতার মুসলিমরা এখন এতো দুর্বল হয়েছে যে, একটু চিন্তা-ভাবনাও করতে পারে না। পশ্চিমা বিশ্বের বিপজ্জনক চিন্তাগুলোকে মোকাবেলা করার মতো শক্তিশালী চিন্তা এখন মুসলিমদের নেই। আমাদের চিন্তা এখন খুবই দুর্বল। আমাদের মধ্যে যারা বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে কথা বলেন, তাদের খুবই অল্প সংখ্যক ব্যক্তিই বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা পায়। আমাদের অনেক ভালো ভালো ডাক্তার আছে, অনেক ভালো ভালো ইঞ্জিনিয়ার আছে, কিন্তু যখন চিন্তার জগতে প্রবেশ করা হয়, তখন আর কোনো মুসলিম চিন্তাবিদকে আমরা খুঁজে পাই না। এটা আমাদের নিজেদেরই ব্যর্থতা। অথচ যে কোরআনের ওপর ভিত্তি করে আমাদের সভ্যতা গড়ে উঠেছে, সে কোরআনে চিন্তা-ভাবনা করা এবং মাথা খাটানোর জন্য প্রচুর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আসুন বর্তমান দুনিয়ার দিকে একটু তাকাই। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে যতগুলো মতবাদ মুসলিম বিশ্বে এসেছে, সবগুলো মতবাদ সাগরের তরঙ্গের মতো, একটির পর একটি আসতে শুরু করেছে। যেমন, যুক্তিবাদ (rationalism), অভিজ্ঞতাবাদ (empiricism), মানবতাবাদ, বিবর্তনবাদ, ইত্যাদি। রাজনৈতিক ও সামাজিক মতবাদগুলো হলো যেমন উদারনীতি (liberalism), সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ইত্যাদি এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে বিজ্ঞানবাদ। এ সবগুলো মতবাদ আমাদের চতুর্দিকে বাতাসের মতো ঘুরছে এবং বিভিন্নভাবে আমাদের চিন্তাকে প্রভাবিত করছে। মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠেছে উপনিবেশ সময়ে প্রতিষ্ঠিত খ্রিষ্টান মিশনারি স্কুলের ওপর ভিত্তি করে। অবশ্য, ইরান ও তুরস্কের মতো দু-একটি দেশ হয়তো ব্যতিক্রম আছে। মিসর, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে ধনী মানুষদের ৯০ শতাংশ ছেলে-মেয়েকে মাদরাসায় না পাঠিয়ে পশ্চিমা উপনিবেশের প্রতিষ্ঠিত স্কুলে পাঠানো হয়। মাদরাসায় কেবল গরিব মানুষদের সন্তানদেরকে পাঠানো হয়। অথচ ২০০ বছর আগে মুসলিম দেশগুলোর শিক্ষাব্যবস্থা এমন ছিলো না। যারা পশ্চিমা উপনিবেশের স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছে, তাদের চিন্তা-ভাবনা সবকিছু পশ্চিমা মতবাদগুলো দ্বারা পরিপূর্ণ। এমনকি যারা খুবই ধার্মিক এবং নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, তাদের চিন্তা-ভাবনাও পশ্চিমা মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত। মুসলিমরা এ সমস্ত পশ্চিমা মতবাদকে মোকাবেলা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ